W Life







পোশাক-পরিচ্ছদ ও অন্যান্য বস্তু পবিত্র করার পদ্ধতি 



পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন
তাহারাত (পবিত্রতা) শুধু সেই পানি দ্বারা অর্জন করা যেতে পারে যা স্বয়ং পবিত্র। অপবিত্র পানি দ্বারা যেমনিভাবে
অযু গোসসল হতে পারে না, অনুরূপভাবে কোন অপবিত্র বস্তুও পবিত্র হতে পারে না। বরঞ্চ এর দ্বারা পবিত্র
জিনিসই অপবিত্র হয়ে যায়। এজন্য পানি পবিত্র-অপবিত্র হওয়ার বিধান ও মাসআলা ভালোভাবে জেনে নেয়া
দরকার যাতে নিশ্চিতভাবে পবিত্রতা অর্জন করা যায়।
পানির প্রকারভেদ
মৌলিক পানি দুইভাগে বিভক্ত : পবিত্র পানি ও অপবিত্র পানি।
পবিত্র পানি
পবিত্রতা অর্জনের দিক দিয়ে পবিত্র পানি চার রকম
১. তাহের মুতাহহের গায়ের মাকরূহ : অর্থাৎ এমন পানি যা নিজেও পবিত্র এবং যা কোন ঘৃণার উদ্রেক
ছাড়াই অন্যকে পবিত্র করতে পারে। যেমন- বৃষ্টির পানি, নদী, সমুদ্র, পুকুর, নালা, ঝর্ণা, কূপ,
টিউবওয়েল প্রভৃতির পানি (মিঠা হোক অথবা লোনা) শিশির অথবা বরফ এর পানি। কোন প্রকার
ঘৃনা ব্যতিরেকেই এ সব পানি দিয়ে অযুগোসল করা যাবে এবং অপবিত্র বস্তুকে পবিত্র করা যাবে।

২. তাহের মুতাহহের মাকরূহ : এমন পানি যা নিজে পবিত্র এবং অন্যকেও পবিত্র করতে সক্ষম তবে
ঘৃণার উদ্রেককারী। যেমন- কোন ছোট শিশু পানিতে হাত দিল তার হাত যে নাপাক ছিল তা
নিশ্চিত করে বলা যায় না, তবে সন্দেহ হয়। অথবা বিড়াল বা এমন কোন প্রাণি মুখ দিল যার ঝুটা
বা উচ্ছিষ্ট মাকরূহ। অতএব এমন পানিতে অযু গোসল করা বৈধ তবে মাকরূহ হবে।
৩. তাহের গায়ের মুতাহহের : এমন পানি যা নিজে পবিত্র কিন্তু অন্যকে পবিত্র করতে সক্ষম নয় অর্থাৎ
এমন পানি যা দ্বারা কেউ অযু করল অথবা গোসল করল কিন্তু শরীরে কোন নাজাসাত তার নেই।

এমন পানি যদি কারও শরীর অথবা কাপড়ে লাগে তাহলে নাপাক হবে না। কিন্তু এ পানি দিয়ে
অযু-গোসল হবে না।
৪. মাশকুক : পবিত্র অথবা অপবিত্র হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে। যেমন- যে পানিতে গাধা বা
খচ্চর মুখ দিল, সে পানির হুকুম এই যে, এ পানি দিয়ে অযু করার পর তায়াম্মুমও করতে হবে। মায়ে নাজাসাত বা নাপাক পানি
অপবিত্র পানি তিন প্রকার।
১. অপবিত্র পানি : প্রবাহমান পানিতে অপবিত্র বস্তু পড়ার কারণে সব পানির রং, গন্ধ এবং স্বাদ বদলে গেলে।
২. অপবিত্র আবদ্ধ পানি : পানিতে নাজাসাত পড়ার কারণে সব পানির রং গন্ধ এবং স্বাদ বদলে গেলে।
৩. কালীল রাকেদ : অল্প আবদ্ধ পানি। এ জাতীয় পানি যদি সামান্য নাজাসাত (অপবিত্র বস্তু) পড়ে
এবং তার দ্বারা পানির রং, গন্ধ এবং স্বাদে কোন পরিবর্তন না আসে, তথাপিও সে পানি অপবিত্র
হিসেবে গণ্য।
শরীর, পোশাক-পরিচ্ছদ ও অন্য বস্তু পবিত্রকরণ
 কাপড়ে অপবিত্র বস্তু লাগলে তিনবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রত্যেক বার ভালোভাবে নিংড়াতে হবে। ভালো করে নিংড়িয়ে ধোয়ার পরও যদি দুর্গন্ধ থেকে যায় কিংবা দাগ থাকে তাতে
তাহারাত (পবিত্রতা) শুধু সেই পানি দ্বারা অর্জন করা যেতে পারে যা স্বয়ং পবিত্র। অপবিত্র পানি দ্বারা যেমনিভাবে অযু গোসল হতে পারে না অনুরূপভাবে কোন অপবিত্র বস্তু ও পবিত্র হতে পারে না।
কোন দোষ নেই, কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে।
 কাপড়ে যদি বীর্য লাগে এবং শুকিয়ে যায়, তাহলে আচড়ে তুলে ফেললে অথবা হাত দ্বারা মর্দন
করে তুলে ফেললে পবিত্র হয়ে যায়। যদি বীর্য খুব তরল হয় এবং শুকিয়ে যায় তাহলে ধুয়ে নিলেই
পাক হবে।
 পানির মতো যে সব জিনিস তরল অথচ তৈলাক্ত নয়, তাহলে তা দিয়ে কাপড়ে লাগা নাজাসাত
ধুয়ে পবিত্র করা যায়।
 প্রবাহিত পানিতে কাপড় ধোয়ার সময় নিংড়ানোর দরকার নেই। কাপড়ের একদিক থেকে
অন্যদিকে পানি চলে গেলেই যথেষ্ট।
 কাপড় যদি এমন হয় যে, চাপ দিয়ে নিংড়াতে গেলে তা ছিড়ে যাবে, তাহলে তিনবার ধুয়ে নিলে
সেরে যাবে। তারপর হাত দিয়ে অথবা অন্য কিছু দিয়ে এমনভাবে চাপ দিতে হবে যেন পানি
বেরিয়ে যায় এবং কাপড়ও না ছিড়ে।
 অপবিত্র তেল, ঘি বা অন্য কোন তেল যদি কাপড়ে লাগে, তাহলে তিনবার ধুয়ে নিলে কাপড়
পবিত্র হয়ে যাবে। যদিও তেলের তৈলাক্ততা কাপড়ে অবশিষ্ট থেকে যায়। তেলের সাথে মিশ্রিত
অপবিত্র বস্তু তিনবার ধুয়ে নিলে পবিত্র হয়ে যায়।
 যদি মৃত জন্তুর চর্বিদ্বারা কাপড় নাপাক হয় তাহলে তিনবার ধুইলেই যথেষ্ট হবে না, তৈলাক্ততা দূর
করে ফেলতে হবে।
 চাটাই, বড় সতরঞ্চি, কার্পেট বা এ ধরনের কোন বিছানাপত্র যা নিংড়ানো যায় না, তার উপর যদি
নাজাসাত লাগে তাহলে তা পাক করার নিয়ম এই যে, তার উপর তিনবার পানি ঢালতে হবে।

প্রত্যেকবার পানি ঢালার পর তা শুকাতে হবে। শুকাবার অর্থ এই যে, তার উপর কিছু রাখলে তা
যেন ভিজে না ওঠে।
 নাপাক রঙে রং করা কাপড় পাক করার জন্য এমনভাবে ধুতে হবে যেন পরিষ্কার পানি আসতে
থাকে। তারপর রং থাক বা না থাক কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে।
 মোজা, জুতা অথবা চামড়ার তৈরি অন্যান্য জিনিস যদি নাপাক হয়ে যায়, আর নাপাক জমাটবাঁধা
ঘন হয়, যেমন-গোবর, পায়খানা, রক্ত, বীর্য প্রভৃতি, তাহলে নাজাসাত ঘষে ফেললে পবিত্র হয়ে
যাবে।
আর নাপাক যদি তরল হয় এবং শুকিয়ে যাওয়ার কারণে দেখা না যায়, তাহলে না ধোয়া পর্যন্ততা
পবিত্র হবে না। ধুয়ে ফেলার নিয়ম এই যে, প্রত্যেক বার ধোয়ার পর এতটা বিলম্ব করতে হবে
যেন পানি ঝরা বন্ধ হয়ে যায়। এভাবে তিনবার ধুতে হবে।
 কাপড়ে নাপাক লাগলে তিনবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং প্রত্যেকবার ভালো করে চাপ
দিয়ে নিংড়াতে হবে। ভালো করে নিংড়িয়ে ধোয়ার পরও যদি দুর্গন্ধ থেকে যায়, কিংবা দাগ থাকে
তাতে কোন দোষ নেই, পবিত্র হয়ে যাবে।
 নাপাক যদি এমন জিনিসে লাগে যা নিংড়ানো যায় না। যেমন-খাট, পালং, মাদুর, পাটি, চাটাই,
মাটির পাত্র, কলস, বাসন, চীনা মাটির প্লেটে, পেয়ালা, বোতল ইত্যাদি। তবে তা পবিত্র করার

নিয়ম এই যে, একবার ধুয়ে এমনভাবে রাখতে হবে যেন সমস্তপানি ঝরে যায়। এরপর আবার
ধুতে হবে এরূপ তিনবার ধুয়ে নিলে তা পবিত্র হয়ে যাবে।
 দু’পাট্টা বিশিষ্ট কাপড়ের এক পাট্টা যদি পবিত্র ও অপর পাট্টা অপবিত্র হয়, তাহলে ঐ পবিত্র পাট্টার
উপর নামায আদায় করলে নামায আদায় হয়ে যাবে।
অল্প আবদ্ধ পানি: এজাতীয় পানিতে যদি সামান্য নাজাসাত
(অপবিত্র বস্তু) পড়ে এবং তার দ্বারা পানির রং, গন্ধ এবং স্বাদে কোন
পরিবর্তন না আসে, তথাপিও সে পানি > অপবিত্র হিসেবে গণ্য।


সিংহ শিয়ালকে বলে - যা আমার জন্য খাবার নিয়ে আয়।
শিয়াল ঘোড়ার কাছে গিয়ে বলে- ভাইজান কেমন আছেন?
ঘোড়া চিন্তা করে- যে শিয়াল খ্যাক খ্যাক করা ছাড়া কোনো কথা বলে না- সে আজ এতো মধুর স্বরে ডাকছে কেন?
নিশ্চয়ই কোনো বদ মতলব আছে।
ঘোড়া শিয়ালের ডাকে সাড়া দেয় না।
শিয়াল এবার ময়ুরীর কাছে গিয়ে বলে- আপুমনি কেমন আছো। দেখতে খুবই মিষ্টি লাগছে।
ময়ুরীও বুঝতে পারে- শিয়ালের মুখে মিষ্টি বচন। নিশ্চয়ই লক্ষণ ভালো না।
সে ও সাড়া দেয় না।
শিয়াল এবার গাধার কাছে গিয়ে বলে- বাহ! তোমাকে খুবই হ্যান্ডসাম মনে হচ্ছে।
এরকম হ্যান্ডসাম একটা প্রাণী খেটে খেটে জীবনটা নষ্ট করে দিলো।
তোমাকে আর কষ্ট করতে হবেনা। রাজার বয়স হয়ে গেছে।
তিনি অবসরে যাবেন। আর তোমাকে রাজা বানাবেন।
চলো আমার সাথে সিংহাসনে চলো।
গাধা খুব খুশি হয়। শিয়ালের সাথে সিংহাসনে আসে।
সিংহের কাছে আসা মাত্রই সিংহের এক থাবায় গাধা তার কান দুটো হারায়।
কিন্তু কোনো রকমে পালিয়ে বাঁচে।
শিয়াল গাধার কাছে এসে বলে- এতো বোকা হলে রাজা হবে কিভাবে।
রাজা তোমার মাথায় মুকুট পরাবে। কিন্তু দুপাশে দুটো কান থাকলে কি রাজমুকুট ঠিকমতো মাথায় বসবে।
তাইতো তোমার কান দুটো তোলে নেয়া হয়েছে।
কিছু বুঝনা অবুঝ প্রাণী- এটাকে গ্রুমিং বলে।
চলো চলো আমার সাথে চলো। দেরি হলে অন্য কেউ আবার রাজা হয়ে যাবে।
গাধা আবার সিংহের কাছে আসে। এবার সিংহের আরেক থাবায় তার লেজখানা খসে পড়ে।
কিন্তু এবারও পালিয়ে বাঁচে।
শিয়াল যথারীতি গাধার কাছে এসে বলে- আবারও ভুল করলে।
লেজ থাকলে রাজ সিংহাসনে বসবে কিভাবে।
তাই তোমার লেজটা খসানো হয়েছে।
অবুঝ প্রাণী দূরদর্শী চিন্তা করতেই পারোনা।
এটা হলো আলট্রা গ্রুমিং। মানে একেবারে ফাইনাল টাচ।
চলো চলো তাড়াতাড়ি সিংহাসনে চলো।
গাধা আবারও সিংহাসনে আসে।
এবার আর সে বাঁচতে পারে না।
সিংহের থাবায় তার ক্ষত বিক্ষত দেহ খানা মাটিতে পড়ে আছে।
সিংহের দাঁতে মুখে রক্তের দাগ।
শিয়াল সিংহকে বলে - মহারাজ এতো কষ্ট করে আপনি খাবেন।
মাথাটা আমাকে দেন। সুন্দর করে প্লেটে সাজিয়ে দেই।
শিয়াল গাধার ব্রেণটুকু খেয়ে মাথার অবশিষ্ট অংশ সিংহকে দেয়।
সিংহ বলে- ব্রেণ কোথায়।
শিয়াল বলে- মহারাজ যে বারবার ধোকা খেয়েও আপনার কাছে এসেছে- আপনি কি মনে করেন তার ব্রেণ বলে কিছু আছে।
গাছের ডালের উপর থেকে ময়ুর বলে-
তার ব্রেণ ঠিকই আছে। কিন্তু অতি সহজ সরল হওয়ায় প্রতারকদের বুঝতে পারেনি।
প্যাঁচা তার সন্তানকে বলে -এই ঘটনা থেকে তোমরা কি শিখলে।
শিখলামঃ
হঠাৎ করে কেউ যদি বড় আপন হয়ে ওঠে, বুঝতে হবে তার গোপন দূরভিসন্ধি আছে।
এটাও শিখলাম- যার যে কাজ তাকে সেটাই করতে হয়। অন্যের কুমন্ত্রণা শুনতে হয়না।
লোভের ফল কখনো মিষ্টি হয়না।
সাদাসিদা হওয়া ভালো। কিন্তু বোকা হওয়া ভালো না।
সবচেয়ে বড় জিনিসটা শিখলাম তা হলো- প্রতারকদের একবার বিশ্বাস করা যায়। কিন্তু বারবার বিশ্বাস করা যায় না।
অতি বিশ্বাস করে সে ঠকেছে। আর নিজের জীবন দিয়ে তার বিশ্বাসের মর্মন্তুদ পরিসমাপ্তি ঘটেছে।
 

Comments

Popular posts from this blog

প্রত্যয়ণ পত্র এ মর্মে প্রত্যয়ণ করা যাইতেছে যে, এমএসসি ডিগ্রি অর্জনের আংশিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে পরিবেশ বিভাগ

Sundarban