সীরাতে ইবনে হিশাম

রাব্বল আলামীন মহান আল্লাহর প্রেরিত সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সা) সর্বকালের সমগ্র মানবগােষ্ঠীর জন্য সর্বোত্তম আদর্শ; শ্রেষ্ঠতম পথ প্রদর্শক; তাঁর অনুকরণ ও অনুসরণের মধ্যেই নিহিত আছে ইহকালীন ও পরকালীন জীবনের শান্তি, কল্যাণ ও নাজাতের নিশ্চয়তা; তিনি দীন ইসলামের জীবন্ত প্রতীক; তাঁর পবিত্র জীবন কুরআন পাকেরই বাস্তব রূপ; ইসলামী জীবন গঠনের জন্য তাই তাঁর সীরাত সম্পর্কিত জ্ঞান আহরণ অপরিহার্য;

 

বংশ

হযরত মুহাম্মদ (সা) থেকে হযরত আদম (আ) পর্যন্ত

আৰু মুহাম্মদ আবদুল মালিক ইবন হিশাম বলেন: এই গ্রন্থখানি হচ্ছে

হর রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম ইবন আবদুল্লাহ্ ইবন আবদুল মুর্খালিবের জীবন চরিত। আবদুল মুত্তালিবের প্রকৃত নাম শায়বা' ইবন হাশিম। হাশিমের আসল নাম আমর ইবন আবদে মানাফ। আবদে মানাফের আসল নাম মুগীরা ইবন কুসাই ইব্‌ন কিলাব ইব্‌ন মুররা

১. ইবন ইসহাকও বলেছেন যে, তাঁর নাম শায়বা এবং এটাই নির্ভুল বর্ণনা। তাঁর এই নাম রাখার কারণ এই যে, মনের সময়ই তাঁর মাথায় প্রাক্ক চুল পাওয়া গিয়েছিল। আবদুল মুত্তালিব ছাড়া অন্য যে সব আরব ব্যক্তির নাম শায়বা রাখা হয়েছে, তাদের নামের পেছনে রয়েছে বিচক্ষণতা ও বুদ্ধিমত্তা লাভের শুভ কামনা। হারম (বৃদ্ধ) ও কবীর (প্রবীণ) শব্দ দিয়েও একই কারণে নামকরণ করা হয়ে থাকে। আবদুল মুত্তালিব ১৪০ বছর বেঁচে ছিলেন। তিনি ছিলেন খ্যাতনামা কবি উবায়দ ইবন আব্বাসের সমসাময়িক। কথিত আছে তিনিই চুলে প্রথম কালো কলপ ব্যবহার করেন। রওল 'উফ' গ্রন্থে তার আসল নাম আমের বলা হয়েছে।

:

২. আমর ধাতুগত দিক দিয়ে চারটি অর্থ বহন করে আয়ুষ্কাল, দাঁতের পাটি, জামার আস্তিনের একাংশ এবং কানের দুল।

মুগীরা অর্থ শত্রুর ওপর প্রচণ্ডভাবে হামলাকারী, অথবা শক্তভাবে রশি দিয়ে বন্ধনকারী।-

4. সাই-এর আসল নাম যায়। কুসাই শব্দের ধাতুগত ও আভিধানিক অর্থ দূরবর্তী। তিনি তার মাতা ফাতিমার গর্ভে থাকা অবস্থায় তার পিতা রবিয়া ইবন হারাম তার আতি-গোষ্ঠী থেকে দূরে কাযাআ নামক স্থানে চলে যান। ফলে তার নাম হয়েছে কুসাই ।

. কিলাব শব্দটির আভিধানিক অর্থ দু'টি (১) কালব তথা কুকুরের বহুবচন। অর্থাৎ কুকুরগুলো, (২) পরস্পরকে আক্রমণ করা, খাওয়া পাল্টা ধাওয়া করা। এ শব্দটি দ্বারা কোন মানুষ বা গোত্রে করার তাৎপর্য প্রথম অর্থের আলোকে এই দাঁড়ায় যে, আরবরা হয়তো সংখ্যাধিক্য ও বংশ বিস্তারকে বেশি পসন্দ করতো। আর দ্বিতীয় অর্থের আলোকে তাৎপর্য এই যে, আরবরা যুদ্ধবাজ ও দাংগাবাজ মানুষ পসন্দ করে। কথিত আছে যে, আবূ রুকাইশ আরাবীকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, আপনারা আপনাদের ছেলেদেরকে কালব (কুকুর), যিব (বাঘ) ইত্যাকার নিকৃষ্টতম শব্দাবলী দিয়ে নামকরণ করেন, অথচ দাসদেরকে সুন্দর সুন্দর শব্দ দ্বারা নামকরণ করেন যেমন মারযূক (সঞ্চল ) এবং রাবাহ (লাভজনক)-এর কারণ কি? আৰু রুকাইশ জবাবে বলেন, আমরা আমাদের ছেলেদের নাম রাখি আমাদের শুক্রদের জন্য এবং দাসদের নাম রাখি নিজেদের জন্য, অর্থাৎ ছেলেরা শত্রুদের বিরুদ্ধে অস্ত্র স্বরূপ এবং তাদের কলিজায় বিদ্ধ তাঁর স্বরূপ। এ জন্য তারা এ জাতীয় শব্দ দ্বারা তাদের নামকরণ করে থাকে।

এ সুররা শব্দের শাব্দিক অর্থ অতিশয় তিক। মূল শব্দ মুকরুন অর্থ তিক্ত। কারো কারো মতে মুররা এক ধরনের তরকারি যা মাটির নীচ থেকে তুলে তেল ও ভিনেগার দিয়ে খাওয়া হয়।


Comments

Popular posts from this blog

প্রত্যয়ণ পত্র এ মর্মে প্রত্যয়ণ করা যাইতেছে যে, এমএসসি ডিগ্রি অর্জনের আংশিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে পরিবেশ বিভাগ

Sundarban